রশীদ হায়দার Rashid Hayder Biography 1941-
If you cannot view the fonts properly please download and Install this file.
পাবনা শহরের উপকন্ঠে দোহারপাড়া গ্রাম ৷ নিজ বাড়ির কাচারী ঘরে বসে মিটিং করছেন উওরবঙ্গের বিখ্যাত ঠিকাদার মোহাম্মদ হাকিমউদ্দীন শেখ৷ ফজলি আমের গন্ধে ম ম করছে তাঁর পুকুর আর বাগান ঘেরা বিশাল বাড়ি৷ ১৯৪১ সালের ১৫ জুলাইয়ের সেই বিকালে হাকিমউদ্দীন মিটিং - এ জরুরী কথাবার্তা বলছেন, আর মাঝে মাঝে তাকাচ্ছেন ঘরের বাইরে ৷ দেখলেই বোঝা যায় তিনি উত্কন্ঠিত হয়ে অপেক্ষা করছেন বিশেষ কোনো খবরের জন্য৷ তাঁর মেজো মেয়ে রোকেয়া মনসুর জ্যোত্স্না অবশেষে কাংখিত সেই খবর নিয়ে আসে৷
: "আব্বা, আব্বা, মেজো মার ছাওয়াল হয়েছে ৷" হাকিমউদ্দীন মিটিং থেকে উঠে আসেন৷ আঁতুড় ঘরে এসে দেখেন নবজাতক গোল গোল চোখে তাকিয়ে আছে ছাদের দিকে৷ কান্নাকাটির নাম গন্ধ নেই৷ তিনি অবাক হলেন নবজাতকের গায়ের রং দেখে৷ নবজাতকের টুকটুকে ফর্সা গায়ের রং যেন তাঁকে স্মরণ করিয়ে দিল বাইশ পুরুষ আগে তাঁদের পূর্ব পুরুষ ছিলেন ইরানে৷
নবজাতকের নাম রাখা হলো দুলাল৷ পোষাকী নাম শেখ ফয়সাল আবদুর রশীদ মোহাম্মদ জিয়াউদ্দীন হায়দার৷ আর তাঁর ছোট মা তাঁকে খেপাতেন ফুঁকনা মৌলবী নামে ৷ কারণ ছেলেবেলায় স্কুলে পড়ার সময় কিছুদিনের জন্য রশীদ হায়দারের মনে প্রবল ধর্মভাব জাগে৷ নিয়মিত পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়তেন৷ রমজানের সময় সবগুলি রোজা রাখার চেষ্টা করতেন , তারাবীতে যেতেন৷ তাঁর প্রবল ধর্মভাব দেখে তাঁর ছোট মা তাঁকে এই নামে খেপাতেন ৷ সেই ফুঁকনা মৌলবী বড় হয়ে এফিডেফিট করে পোষাকী নাম ছেঁটে ছোট করে ফেলেন ৷ তিনি দেশ জুড়ে কালক্রমে পরিচিতি লাভ করেন কথাশিল্পী রশীদ হায়দার নামে৷
রশীদ হায়দারের তিন মা ৷ বড় মা নিহার বেগমের ১ সন্তান, মেজো মা অর্থাত্ তাঁর নিজের মা রহিমা খাতুনের ঘরে ৮ ছেলেমেয়ে এবং ছোট মা মাজেদা খাতুনের ৫ ছেলেমেয়ে৷ একই ছাদের নীচে তিন মা আর ১৪ ভাই-বোনের বিশাল সংসারে সচ্ছলতা ছিল বটে, কিন্তু শান্তি ছিল না৷ কারণে অকারণে বাবার কাছে মায়েদের মার-ধোর খাওয়া ছিল নিত্য-নৈমিত্তিক ঘটনা ৷ এমন পরিবেশের মধ্যে বেড়ে ওঠা রশীদ হায়দার ও তাঁর ভাই-বোনরা শিক্ষিত হয়ে সাহিত্য - সংস্কৃতির জগতে প্রতিষ্ঠা লাভ করেছেন - বিষয়টি একদিকে যেমন অবিশ্বাস্য, অন্যদিকে তেমনি বিস্ময়কর৷
রশীদ হায়দারের ছেলেবেলার উল্লেখযোগ্য অংশ কেটেছে দোহারপাড়া গ্রামে ও পাবনা জেলা শহরে৷ গ্রাম তাঁকে ভালোবাসতে শিখিয়েছে প্রকৃতি আর উদার আকাশকে৷ তিনি যখন জন্ম নেন তখন তাঁর বাবার রমরমা অবস্থা৷ উত্তর বঙ্গের প্রথম শ্রেণীর ঠিকাদার, প্রচুর জমিজমা৷ বড় ঠিকাদার হিসাবে তাঁর ব্যাপক পরিচিতি ছিল৷ কয়েক একর জমির ওপর একই সীমানার মধ্যে তিন শরীকের বাড়ি, প্রায় তিনবিঘা পুকুর , উত্তরে ও পূবে আম, কাঁঠাল, লিচু, জাম , নারিকেল বাগান৷ আর তার সাথে ঘন বাঁশ ও বেতের ঝাড় ৷ সন্ধ্যা হলেই মনে হতো পুরো গ্রাম ঘুমিয়ে পড়েছে৷ সন্ধ্যার সময় পুব আকাশের বাঁশ ঝাড়ে আটকে থাকা চাঁদ তাঁর বুকের ভেতরে অন্যরকম অনুভূতির সৃষ্টি করত৷ কেমন যেন কষ্ট হতো তাঁর চাঁদের জন্য৷ আবার এই বাঁশ ঝাড়ই ছিল তাঁর অপার আনন্দের উত্স৷ আজও ভোলেননি বেত ঝাড়ে শিয়ালের গর্তে খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে শিয়াল বের করে তাড়িয়ে বেড়ানো, বাড়ির কাজে ব্যবহারের জন্য আনা স্তুপীকৃত বালির গর্তে হাত ঢুকিয়ে বেজির গর্ত বানানো, ঘুড়ি কেটে গেলে কেঁদেকেটে একসা হওয়ার সেইসব আনন্দে ভরা উচ্ছল দিনগুলো ৷
মামাতো ভাই মোগলের কল্যাণে বিড়ি টানায় ক্লাস থ্রি থেকে হয়ে উঠেছিলেন পোক্ত৷ গানের গলাটাও নেহাত্ মন্দ ছিল না ছেলেবেলায় ৷ কিন্তু কোন এক আজানা কারণে গান শেখার জন্য পাননি বাবার অনুমোদন৷ নাটক, গানবাজনা নিয়ে ব্যস্ত ছোট চাচা আর মাছ ও পাখি শিকারী শৌখিন মেজো চাচা ছিলেন শৈশব- কৈশোরে তাঁর প্রিয় চরিত্র৷
মুগ্ধ হতেন গ্রামে ফেরি করতে আসা ঘাগড়া পড়া, মাথায় নানা রঙের ফিতার বিনুনী আর নানা কারুকাজের জামা কাপড় পরা ইরানী চুড়িওয়ালীদের দেখে৷ পৈতৃক বাড়ি থেকে আধ মাইল দূরে ছিল শাখা পদ্মা৷ বর্ষায় নদীর বুকে ভেসে বেড়ানো রঙ-বেরঙের পাল তোলা নৌকা আর নৌকার ওপরেই বাস করা বেদে-বেদেনীর জীবন ছিল তাঁর কাছে দারুণ বিস্ময়ের বিষয়৷
পারিবারিক বিবাদের কারণে অভিমান করে রশীদ হায়দারের বাবা গ্রামের বাড়ি ছেড়ে চলে আসেন পাবনা জেলা শহরে৷ সেই শহরের জিলাপাড়ায় বাড়ি তৈরি করে পরিবারসহ থাকা শুরু করেন৷ সেসময় বড় বোন ঝর্ণাকে নিয়ে রশীদ হায়দার পাবনার কামিনী গার্ডেনে রোজ ভোরে বকুল ফুল কুড়াতে যেতেন৷ বাজার করার সময় পাকা চোরের মত পয়সা মেরে দিতেন৷ এ সম্পর্কে তিনি বলেন, ছিলাম 'পাকা চোর অতিশয়'৷ সেই সময়ে একটাকায় অনেক বাজার পাওয়া যেত ৷ নিজের সাথে তাঁর চুক্তি ছিল- প্রতি টাকায় এক আনা অন্তত মেরে দেবেন৷ এক আনাতে দুটো জিলাপী, চারটে দিলখোশ বিস্কুট আর একমুঠো নোকোন দানা পাওয়া যেতো ৷ মাঝে মাঝে এসব না খেয়ে পয়সা জমাতেন৷ সাড়ে তিন আনা কোনভাবে জমাতে পারলেই সোজা সিনেমা দেখার জন্য হাজির হতেন পাবনার বানী সিনেমা বা রূপকথা সিনেমা হলে ৷
চুরি বিদ্যায় হাত পাকানো ও সিনেমা দেখার পাশাপাশি পাবনা শহরে এসে অন্নদা গোবিন্দ লাইব্রেরীর সাথে তাঁর যোগাযোগ হয়৷ তাঁর সাহিত্যচর্চার দ্বার উন্মোচন করার নেপথ্যে এই লাইব্রেরীর ভূমিকা ছিল অসামান্য৷ বাজারের টাকা চুরির একটাকা আর মায়ের কাছ থেকে দুই টাকা নিয়ে তিনি এই লাইব্রেরীর সদস্য হন৷ লাইব্রেরীতে পড়তেন বিখ্যাত শিশুতোষ পত্রিকা সন্দেশ আর শুকতারা৷ এই লাইব্রেরীর সহকারী লাইব্রেরিয়ান ছিলেন বিমল কুমার ভৌমিক ৷ রশীদ হায়দার গোপালচন্দ্র ইন্সটিটিউশন নামে যে স্কুলে পড়তেন, তিনি ছিলেন সেই স্কুলের বাংলা শিক্ষক৷ একদিন তাঁর সৌজন্যে পড়া হয়ে যায় বিভূতিভুষণের পথের পাঁচালী উপন্যাস৷ এই উপন্যাসটি পড়ার মধ্যে দিয়ে ছেলেবেলায় তাঁর মনোজগতে যে আলোড়ন ওঠে তারই ফলে একদিন তিনি কথা শিল্পী হিসাবে আত্মপ্রকাশ করেন৷ পথের পাঁচালী পড়ার সময় তিনি ছিলেন ক্লাস সেভেনের ছাত্র৷
ঠিকাদার বাড়িতে যতটা পয়সা ছিল, ততোটা লেখাপড়া ছিল না৷ রশীদ হায়দারের বাবা চিরকালই পৈতৃক পেশা ঠিকাদারি নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন৷ তাঁর নিজের ছোট দুভাইয়ের পড়াশোনা বা ছেলেমেয়েদের পড়াশোনার দিকে তেমন নজর দেবার মত সময় তাঁর কখনই ছিল না৷ রশীদ হায়দারের ভাষায় তাঁদের বাড়িতে "বিত্ত যতটা ছিল বিদ্যা ততটা ছিল না৷" অথচ তাঁদের বাড়িতে তিন,চার জন মাষ্টার জায়গীর থাকতেন৷
রশীদ হায়দারের মা রহিমা খাতুন লেখাপড়া করেছিলেন মাত্র ক্লাস থ্রি পর্যন্ত৷ কিন্ত আগ্রহ ছিল বই পড়ার৷ তাই বানান করে করে পড়ে ফেলেছিলেন রবীন্দ্রনাথ আর শরত্চন্দ্রের বহু উপন্যাস৷ তাঁর বড় ভাই জিয়া হায়দার ছিলেন বংশের প্রথম মাধ্যমিক ডিগ্রিপ্রাপ্ত ব্যক্তি৷ রশীদ হায়দারের অকপট স্বীকারোক্তি "আমার স্বীকার করতে কোন কুন্ঠা নেই, আমাদের হওয়ার কথা ছিল ছোটোখাটো ঠিকাদার কিংবা জজকোটের কেরানী অথবা মামলাবাজ জোতদার ৷ জিয়াভাই পথ তৈরি না করলে আমাদের ওই হতো পরিণতি৷ জিয়া হায়দারের পদাংক অনুসরণ করেই আমরা সবাই শিক্ষার আলোয় আলোকিত হয়ে ওঠার সুযোগ পেয়েছিলাম৷" রশীদ হায়দারের জীবনে বড় ভাইয়ের প্রভাব ছিল খুব বেশি৷ সাহিত্য সংস্কৃতির জগতে পদার্পণের ক্ষেত্রে বড় ভাই-ই ছিলেন তাঁর প্রধান পথিকৃত্৷
গ্রামের আরিফপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তাঁর লেখাপড়ার হাতেখড়ি৷ পাবনা শহরে এসে ১৯৪৯ থেকে ১৯৫১ সাল পর্যন্ত পড়ালেখা করেন গোস্বামী মাধ্যমিক স্কুলে৷ ১৯৫২ সালে ক্লাস ফাইভে উঠে ভর্তি হন গোপালচন্দ্র ইন্সটিটিউশনে৷ এই স্কুল থেকেই তিনি মাধ্যমিক পাশ করেন৷ তবে গণিতে কাঁচা হবার কারণে রশীদ হায়দার প্রথমবার মাধ্যমিক ফেল করেন৷ "ঐ বিড়িফোকা ছেলে ফেল করবে না তো না কে করবে?" আত্মীয়-পরিজনের এই বিদ্রূপকে মিথ্যা প্রমাণিত করে দ্বিতীয় বার পরীক্ষা দিয়ে তিনি ১৯৫৯ সালে দ্বিতীয় বিভাগে মাধ্যমিক পাশ করেন ৷ কিন্তু উচ্চমাধ্যমিক পড়তে গিয়ে দেখা দেয় ফের বিপত্তি৷ বাবার ইচ্ছে ছেলেকে ঢাকার পলিটেকনিক বা পাবনার এডওয়ার্ড কলেজে বিজ্ঞান বিভাগে পড়াবেন ৷ কিন্তু রশীদ হায়দার বেঁকে বসলেন ৷ বাবা রাগ করে বললেন, "তাহলে ফুলকপি বাঁধাকপি হওয়ার জন্য উচ্চমাধ্যমিক পড়বে? ওটা হবে না ৷ বিজ্ঞান বিভাগে পড়তে হবে৷" তাঁর বাবা মাঝে মাঝেই লেখক কবিদের কটাক্ষ করে বাঁধাকপি- ফুলকপি বলতেন ৷ কটাক্ষ করে লেখক কবিদের বাঁধাকপি- ফুলকপি বলতেন ঠিকই কিন্ত কাগজে ছেলেদের লেখা ছাপা হলে তিনি সেই কাগজ জনে জনে দেখাতেন৷
বাবার কথায় মহা ফ্যাসাদে পড়লেন রশিদ হায়দার৷ তাঁকে এ বিপদ থেকে রক্ষা করলেন তাঁর মেজো দুলাভাই আবুল মনছুর৷ তিনি রশীদ হায়দারের বাবাকে বললেন "ওর ইচ্ছার বিরুদ্ধে উচ্চমাধ্যমিকে বিজ্ঞান বিভাগে পড়ালে সময় ও টাকা পয়সা নষ্ট তো হবেই; সেই সাথে দুলালের মনোবলও নষ্ট হবে৷" তাঁর যুক্তির কাছে অনিচ্ছা সত্ত্বেও নতি স্বীকার করতে হয় রশীদ হায়দারের বাবাকে৷ ১৯৬১ সালে পাবনা এডওয়ার্ড কলেজের শিক্ষা সমাপন করে তিনি চলে আসেন ঢাকায়৷ ভর্তি হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ৷ তিনি স্নাতক (সম্মান) ও স্নাতকোত্তর শেষ করেন এই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে৷
নিজের প্রেম ও বিয়ে নিয়ে বড় অকপট রশীদ হায়দার ৷ হাসতে হাসতেই বলেছেন তাঁর প্রথম প্রেমের কথা৷ তখন তিনি ক্লাস এইটের ছাত্র৷ সেই সময় তাঁর এক বন্ধুর ছোট বোনকে কিং সাইজের ফজলি আম দিয়ে প্রেম নিবেদন করেছিলেন৷ প্রেম-ভালোবাসা সম্পর্কে তাঁর ধারণা জন্মায় কিশোরকাল থেকেই৷ ছেলেবেলা ও কিশোরকালে বাজারের পয়সা সরিয়ে অজস্র সিনেমা দেখার ফল ফলতে দেরী হয়নি৷ তবে তিনি উচ্ছন্নে যাননি৷ ছেলেবেলার প্রেমকে তিনি দেখেছেন জীবনের অনিবার্য অংশ ও শিল্প হিসাবে ৷
আর বিয়ের আগের প্রেম সম্পর্কে তাঁর দেওয়া বিবরণটিও বড্ড মজার ৷ তাঁর স্ত্রী আনিসা আখতার ওরফে ঝর্ণা পাবনা এডওয়ার্ড কলেজে তাঁরই সহপাঠি ছিলেন, কিন্তু রশীদ হায়দার তাঁকে ভালোভাবে চিনতেন না, জানতেনও না৷ আনিসা আখতার উচ্চমাধ্যমিক ও স্নাতকে ভালো ফল করেননি বলে পড়াশুনায় রশীদ হায়দারের চেয়ে দুই বছর পিছিয়ে পড়েন৷ এরপর আনিসা আখতার যখন ঢাকায় স্নাতকোত্তর পড়তে আসেন তখন পুরনো দুই সহপাঠির নতুন করে পরিচয় হয়৷ এরপর প্রেম এবং শেষপর্যন্ত বিয়ে৷ রশীদ হায়দার মজা করে বললেন'' ওকে মেঘনাদ বধ কাব্য পড়াতে গিয়ে দুজনই যে কখন বধ হয়ে গেছি বলতে পারব না৷'' রশীদ হায়দারের বিয়ে হয় ১৯৬৮ সালের ৫ জানুয়ারীতে৷ আনিসা আখতার ও রশীদ হায়দার দম্পতির দুই মেয়ে ৷ হেমন্তী হায়দার (হেমা) ও শাওন্তী হায়দার ( ক্ষমা) ৷ দুজনেই বিবাহিত৷
১৯৬১ সালে রশীদ হায়দার চিত্রালী পত্রিকাতে পার্টটাইম কাজ শুরু করেন৷ চিত্রালীতে কাজ করতেন বড় ভাই জিয়া হায়দার৷ তিনি স্নাতকোত্তর পরীক্ষা দিয়ে নারায়ণগঞ্জ তোলারাম কলেজে চাকুরী করতে চলে যাবার আগে তাঁর অনুরোধেই মূলত: কর্তৃ্পক্ষ ছোট ভাই রশীদ হায়দারকে তাঁর স্থলে চাকুরীতে নিয়োগ দেন ৷
চিত্রালীতে যোগদানের সময় ঢাকায় আসা সদ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক ক্লাসে ভর্তি হওয়া এই তরুণকে গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করেছিলেন বাংলা সাহিত্যের আরেক দিকপাল সৈয়দ শামসুল হক ৷ তাঁর ভাষায়, "রশীদ যেদিন প্রথম চিত্রালীতে ঢোকে সেদিন ওর পরনে ছিল কটকটে নীল রঙের ফুলহাতা দুই পাশে পকেটঅলা জামা, ঢোলা পায়জামা, মোজা ছাড়া অক্সফোর্ড জুতো আর মাথায় চপচপে সর্ষের তেল৷' এই ক্ষ্যাত মার্কা ছেলেটির লেখা দুটো গল্প পর পর বাতিলও করে দেন তিনি৷ জেদ চাপে রশীদ হায়দারের৷ মন শক্ত করে লিখতে বসেন তৃতীয় গল্প৷ এবার সৈয়দ হকের অনুমোদন পেয়ে ছাপার অক্ষরে প্রকাশিত হয় সেই গল্প৷
১৯৬৪ সালে চিত্রালীর পাশাপাশি পাকিস্তান রাইটার্স গিল্ড এর মুখপত্র পরিক্রম এর সহকারী সম্পাদক হিসাবে কাজ করার সুযোগ লাভ করেন তিনি৷ স্নাতক পরীক্ষার কিছুদিন আগে তিনি চিত্রালীর কাজ ছেড়ে দিয়ে রিসার্চ এ্যাসিসটেন্ট হিসাবে যোগ দেন ন্যাশনাল বুক সেন্টার অফ পাকিস্তানে৷ এরপর ১৯৭০ সালে তিনি বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন ব্যাংকের ত্রৈমাসিক পত্রিকা কৃষি ঋণ এর সম্পাদক হিসাবে যোগ দেন৷ এ কাজে যোগদানের জন্য তাঁকে যেতে হয়েছিল করাচীতে৷ তবে ১৯৭০ সালের নভেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহেই তিনি বদলি হয়ে ঢাকায় চলে আসেন৷ এই চাকুরী তাঁকে আর্থিক নিরাপত্তা দিলেও মানসিক শান্তি দিতে পারেনি৷ বাংলাদেশ স্বাধীন হবার পর, ১৯৭২ সালের আগষ্ট মাসে তত্কালীন ম্যানেজিং ডিরেক্টর হেমায়েতউদ্দিন আহমেদ সম্পাদক পোষ্ট বিলুপ্ত করে ম্যানেজারের প্রশিক্ষণ নেবার জন্য তিনি রশীদ হায়দারকে পাঠালেন সোনালী ব্যাংকে৷ তাঁর সৃজনশীল মন হাঁফিয়ে উঠেছিল একাজ করতে গিয়ে ৷ ব্যাংকের কাজ থেকে মুক্তি পাবার জন্য মরিয়া হয়ে ওঠেন তিনি৷ ভাগ্য সুপ্রসন্ন থাকায় ১৯৭২ সালের অক্টোবরের গোড়ায় তিনি চাকুরী পেয়ে যান বাংলা একাডেমীতে৷ এরপর অন্য কোথাও ফিরে তাকাতে হয়নি তাঁকে৷ সুদীর্ঘ সময় কর্মরত থাকার পর ১৯৯৯ সালের মে মাসে বাংলা একাডেমীর পরিচালক হিসাবে অবসর নেন তিনি৷
বাংলা একাডেমীতে কর্মরত থাকাকালীন সময়ে তাঁর সেরা কীর্তি স্মৃতি ১৯৭১ ৷ মুক্তিযুদ্ধে স্বজন হারানো মানুষের স্মৃতিচারণা নিয়ে তাঁর সম্পাদিত 'স্মৃতি ১৯৭১ বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ তথ্যবহুল গ্রন্থ ৷ ১৩ খন্ডের এই গ্রন্থে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে আত্মদানকারী বুদ্ধিজীবীদের স্বজনদের স্মৃতিচারণে সার্থকভাবে উঠে এসেছে মুক্তিযুদ্ধের গৌরবোজ্জ্বল সেই দিনগুলি, তাঁদের স্বজন হারানোর হাহাকার আর স্বাধীন দেশে বেঁচে থাকার জন্য তাঁদের তীব্র সংগ্রামের কথা৷ বাংলাদেশের আনাচ-কানাচ থেকে মুক্তিযুদ্ধে শহীদ বুদ্ধিজীবী পরিবার খুঁজে বের করা এবং তাঁদের পরিবারের কোন সদস্য বা কোন ঘনিষ্ঠজনকে দিয়ে স্মৃতিকথা লিখিয়ে নেবার কাজটি মোটেও সহজ ছিল না৷ সম্পাদক হিসাবে এখানেই রশীদ হায়দারের কৃতিত্ব৷ যদিও তিনি মনে করেন মুক্তিযুদ্ধে স্বজনহারাদের বেদনা, হাহাকার সম্পাদনা করা কখনই সম্ভব নয় ৷ 'স্মৃতি ১৯৭১- এর সম্পাদক হিসাবে তাঁর নাম থাকলেও তিনি মনে করেন এই সব গ্রন্থে অন্তর্ভুক্ত কাহিনী ও তথ্যের তিনি সংগ্রাহক মাত্র৷
ছেলেবেলায় তার বাবার স্বপ্ন ছিল তাঁকে মৌলবী বানাবেন৷ আর ছোট রশীদ হায়দারের নিজের মনের বাসনা ছিল সিনেমা হলের গেটকীপার হওয়া৷ আর একটু বড় হবার পর তাঁর সাধ জেগেছিল ট্রেনের চেকার হবেন, যাতে নানান জায়গায় ভ্রমণ করা যায়৷ এখনও ভ্রমণ তাঁর খুব প্রিয় বিষয়৷ ইউরোপ, এশিয়া ও আমেরিকার বহুদেশ তিনি ভ্রমণ করেছেন ৷
লুঙ্গি পরে খালি পায়ে লাইব্রেরীতে যাওয়া স্কুলের ব্যাড বয়ের তালিকাভুক্ত এই মানুষটি কোন দিন স্বপ্নেও ভাবেননি একদিন কলম তাঁর জীবনের প্রধান অবলম্বন হয়ে ঊঠবে৷ ক্লাস সিক্সে থাকতে অগ্রজ জিয়া হায়দার তাঁর নামে একটি কবিতা লিখে দিয়েছিলেন৷ কায়েদে আযম জিন্নাহকে নিয়ে লেখা সেই কবিতা ছাপা হয়েছিল দৈনিক ইত্তেহাদ - এর ছোটদের পাতায়৷ সেই শুরু ৷ এরপর অবশ্য রশীদ হায়দারের নিজেরই লেখা হযরত মোহাম্মদ নামে একটি লেখা ছোটদের পাতায় প্রকাশিত হয়৷ পাকিস্তান দিবসে দৈনিক আজাদে বড়দের পাতায় তাঁর লেখা একটি গল্প প্রকাশিত হয়৷ লেখাটি নজর কাড়ে বিমল স্যারের৷ পরদিন স্কুলে বিমল স্যার তাঁর ক্লাসে ঢুকেই ডান কানের পাশে চুলের গোছা টেনে ধরে বললেন "ভালোই তো পাকিছিস (পেকেছিস)"৷ তখন তিনি ক্লাস নাইনের ছাত্র আর গল্পটি ছিলো প্রেমের৷ তিনি গোপালচন্দ্র ইন্সটিটিউশনের দশম শ্রেণীর ছাত্র থাকার সময় সেই স্কুল থেকে প্রথম স্কুল ম্যাগাজিন বের হয় ৷ রশীদ হায়দার ছিলেন সেই ম্যাগাজিনের সম্পাদক৷ তাঁর এই সম্পাদনার কাজের নেপথ্যে উত্সাহ ও অনুপ্রেরণার প্রধান উত্স ছিলেন কিন্তু সেই কান টেনে ধরা বিমল স্যার৷
১৯৬৭ সালের ১লা জানুয়ারী প্রকাশিত হয় রশীদ হায়দারের প্রথম গল্পগ্রন্থ নানকুর বোধি ৷ কোন কিছু না ভেবেই বইটির এক কপি তিনি প্যারিসে সৈয়দ ওয়ালিউল্লাহর কাছে পাঠিয়ে দিয়েছিলেন৷ উত্তরে গল্প গ্রন্থটি ভালো লাগার কথা জানিয়ে সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ লিখেছিলেন - "থামবেন না, লিখে যান ৷"
১৯৭২ সালে সংবাদ পত্রিকায় ধারাবাহিকভাবে লেখা শুরু করেন তাঁর জীবনের প্রথম উপন্যাস গন্তব্যের৷ অর্ধেক ছাপা হবার পর কোন এক কারণে লেখার মেজাজাটি হারিয়ে ফেলেছিলেন তিনি৷ কিন্তু ১৪ বছর পরে একটি পূর্ণাঙ্গ উপন্যাস আকারে ও অসম বৃক্ষ নতুন নামে এটি বের হয় ৷
এরপর একে একে প্রকাশিত হয়েছে গল্প, উপন্যাস নাটক, জীবনী, স্মৃতিকথাসহ প্রায় ৪৫টি গ্রন্থ ৷ সম্পাদনা করেছেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক কয়েকটি অসাধারণ গ্রন্থ স্মৃতি ১৯৭১ ও ১৯৭১ : ভয়াবহ অভিজ্ঞতা, শহীদ বুদ্ধিজীবী কোষ গ্রন্থ, খুঁজে ফিরি ইত্যাদি৷ বর্তমানে তাঁর বইয়ের সংখ্যা ৬০ - এর অধিক৷
১৯৮৪ সালে তিনি বাংলা একাডেমী পুরস্কার লাভ করেন ৷ এছাড়াও লাভ করেছেন অগ্রণী ব্যাংক সাহিত্য পুরস্কার, নেধূ শাহ পুরস্কার, পাবনা জেলা সমিতি স্বর্ণ পদক, রাজশাহী সাহিত্য পুরস্কার, হুমায়ন কাদির পুরস্কারসহ অসংখ্য পুরস্কার৷
কথাশিল্পী হিসাবে রশীদ হায়দার পাঠকের কাছে সুপরিচিতি হলেও ক'জন জানে অভিনেতা রশীদ হায়দারের কথা? ১৯৭৪ সালে দিল্লীতে ন্যাশনাল স্কুল অফ ড্রামায় তিনবছরের জন্য লেখাপড়া করার বিরল সুযোগ পেয়েছিলেন তিনি৷ তিনমাস ক্লাস করার পর বাংলা একাডেমীর চাকুরী রক্ষার্থে তাঁকে ফিরে আসতে হয় ৷ কারণ নাটক করে স্ত্রী ও কন্যার ভরণপোষণ করা সম্ভব ছিলো না৷ তবে নাটকের প্রতি দুর্বলতা রয়ে যায় তাঁর ৷ তাছাড়া নাটকের প্রতি আগ্রহ ছিল তাঁর সেই ছাত্রজীবন থেকেই৷ ১৯৬৪ সালে মুনীর চৌধুরীর পরিচালনায় তিনি অভিনয় করেছেন ভ্রান্তিবিলাস নামক একটি নাটকে কিংকর চরিত্রে ৷ বিশ্ববিদ্যালয জীবনের পরেও দশবারো বছর তিনি নাট্য জগতের সাথে সম্পৃক্ত ছিলেন৷ এসময় অগ্রজ জিয়া হায়দার আমেরিকা থেকে মাষ্টার্স অব ফাইন আর্টস ডিগ্রী নিয়ে ফিরে এসে গড়ে তুলেছিলেন নাগরিক নাট্য সম্প্রদায় নামে একটি নাট্য দল ৷ রশীদ হায়দারও যুক্ত হন এই নাট্য দলের সাথে ৷ দৈনিক বাংলায় কেরাসিন তেল সংকট নিয়ে তাঁর লেখা তেল নাটকটি পড়ে ভালো লেগেছিল আলি যাকেরের৷ তিনিই রশীদ হায়দারকে বার বার তাগাদা দেন এর নাট্যরূপ দেবার জন্য৷ রশীদ হায়দার তেমন গা করছেন না দেখে একদিন বৃটিশ কাউন্সিলে নাগরিক নাট্য সম্প্রদায় নাট্যদলের বাকি ইতিহাস নামক একটি নাটকের ৮ম প্রদর্শনী শেষে আলী যাকের ঘোষণা দেন আমাদের পরবর্তী নাটক রশিদ হায়দারের তৈল সংকট৷ এবার নাট্য রূপ দিতে বাধ্য হন তিনি৷ নাটকটি যথেষ্ট সমাদৃত হলেও তিনি অনুভব করেন মঞ্চের সাথে প্রত্যক্ষভাবে যুক্ত থাকলে তাঁর লেখালেখি ব্যাহত হবে৷ তাই নাটক ছেড়ে কলমকেই শক্ত ভাবে আঁকড়ে ধরেন রশীদ হায়দার৷
সুদীর্ঘ পথ পরিক্রমায় বহুমাত্রিক অভিজ্ঞতা আর ঘটনার ঘনঘটায় পূর্ণ রশীদ হায়দারের জীবন৷ তাই তাঁর গল্প উপন্যাসের রসদ তিনি সহজেই খুঁজে পান নিজের জীবন আর বিশাল পথ পরিক্রমার বর্ণিল অভিজ্ঞতার মাঝে৷ মনের মধ্যে অনুক্ষণ অনুভব করেন আরো লিখে যাওয়ার তাগিদ ৷ এই তাগাদাই হয়তো একদিন জন্ম দেবে আরো অসাধারণ কোন গল্প বা কালোত্তীর্ণ কোন উপন্যাস ৷
সংক্ষিপ্ত জীবনী
নাম: রশীদ হায়দার
পিতা: মোহাম্মদ হাকিমউদ্দীন শেখ
মাতা: রহিমা খাতুন
স্ত্রী: আনিসা আখতার
সন্তান: দুই মেয়ে ৷ হেমন্তী হায়দার (হেমা) ও শাওন্তী হায়দার ( ক্ষমা)
পড়াশুনা:
মাধ্যমিক: গোপালচন্দ্র ইন্সটিটিউশন থেকে ১৯৫৯ সালে দ্বিতীয় বিভাগে মাধ্যমিক পাশ করেন৷
উচ্চমাধ্যমিক: ১৯৬১ সালে পাবনা এডওয়ার্ড কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক পাম করেন৷
স্নাতক: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
স্নাতকোত্তর: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
কর্মজীবন: ১৯৬১ সালে রশীদ হায়দার চিত্রালী পত্রিকাতে পার্টটাইম কাজ শুরু করেন৷ চিত্রালীতে কাজ করতেন বড় ভাই জিয়া হায়দার৷ তিনি স্নাতকোত্তর পরীক্ষা দিয়ে নারায়ণগঞ্জ তোলারাম কলেজে চাকুরী করতে চলে যাবার আগে তাঁর অনুরোধেই মূলত: কর্তৃপক্ষ ছোট ভাই রশীদ হায়দারকে তাঁর স্থলে চাকুরীতে নিয়োগ দেন ৷ ১৯৬৪ সালে চিত্রালীর পাশাপাশি পাকিস্তান রাইটার্স গিল্ড এর মুখপত্র পরিক্রম এর সহকারী সম্পাদক হিসাবে কাজ করার সুযোগ লাভ করেন তিনি৷ স্নাতক পরীক্ষার কিছুদিন আগে তিনি চিত্রালীর কাজ ছেড়ে দিয়ে রিসার্চ এ্যাসিসটেন্ট হিসাবে যোগ দেন ন্যাশনাল বুক সেন্টার অফ পাকিস্তানে৷ এরপর ১৯৭০ সালে তিনি বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন ব্যংকের ত্রৈমাসিক পত্রিকা কৃষি ঋণ এর সম্পাদক হিসাবে যোগ দেন৷ এ কাজে যোগদানের জন্য তাঁকে যেতে হয়েছিল করাচীতে৷ তবে ১৯৭০ সালের নভেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহেই তিনি বদলি হয়ে ঢাকায় চলে আসেন৷ এই চাকুরী তাঁকে আর্থিক নিরাপত্তা দিলেও মানসিক শান্তি দিতে পারেনি৷ বাংলাদেশ স্বাধীন হবার পর, ১৯৭২ সালের আগষ্ট মাসে তত্কালীন ম্যানেজিং ডিরেক্টর হেমায়েতউদ্দিন আহমেদ সম্পাদক পোষ্ট বিলুপ্ত করে ম্যানেজারের প্রশিক্ষণ নেবার জন্য তিনি রশীদ হায়দারকে পাঠালেন সোনালী ব্যাংকে৷ তাঁর সৃজনশীল মন হাঁফিয়ে উঠেছিল একাজ করতে গিয়ে ৷ ব্যাংকের কাজ থেকে মুক্তি পাবার জন্য মরিয়া হয়ে ওঠেন তিনি৷ ভাগ্য সুপ্রসন্ন থাকায় ১৯৭২ সালের অক্টোবরের গোড়ায় তিনি চাকুরী পেয়ে যান বাংলা একাডেমীতে৷ এরপর অন্য কোথাও ফিরে তাকাতে হয়নি তাঁকে৷ সুদীর্ঘ সময় কর্মরত থাকার পর ১৯৯৯ সালের মে মাসে বাংলা একাডেমীর পরিচালক হিসাবে অবসর নেন তিনি৷
সাহিত্য:
প্রথম উপন্যাস: অসম বৃক্ষ
প্রথম গল্পগ্রন্থ: নানকুর বোধি
মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক উল্লেখযোগ্য গল্পগ্রন্থ: 'স্মৃতি ১৯৭১ ও ১৯৭১ : ভয়াবহ অভিজ্ঞতা, শহীদ বুদ্ধিজীবী কোষ গ্রন্থ, খুঁজে ফিরি ইত্যাদি৷
পুরস্কার
১৯৮৪ সালে তিনি বাংলা একাডেমী পুরস্কার লাভ করেন ৷ এছাড়াও লাভ করেছেন অগ্রণী ব্যাংক সাহিত্য পুরস্কার, নেধূ শাহ পুরস্কার, পাবনা জেলা সমিতি স্বর্ণ পদক, রাজশাহী সাহিত্য পুরস্কার, হুমায়ন কাদির পুরস্কারসহ অসংখ্য পুরস্কার৷
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
No comments:
Post a Comment